ঢাকা , শুক্রবার, ১৩ জুন ২০২৫ , ২৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
সংবাদ শিরোনাম
২৫ জুলাইয়ের মধ্যে প্রকাশ হতে পারে এসএসসির ফল শিগগিরই শুরু হচ্ছে সাত কলেজে ভর্তির আবেদন, থাকছে ‘সেকেন্ড টাইম’ তারেক রহমানের দেশে ফেরায় বাধা নেই-স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা করোনার ওমিক্রন প্রতিরোধে প্রয়োজন নতুন টিকা ১৮ আইসিইউ শয্যার মধ্যে ভেন্টিলেটর সচল একটিতে স্বর্ণ চোরাচালানের সিন্ডিকেট সক্রিয় ভারতে বড় ধরনের বিমান দুর্ঘটনার ইতিহাস ভারতে বিমান বিধ্বস্ত আরোহীর সবাই নিহত হবার আশঙ্কা শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করতে ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় ভারতে যুদ্ধে বাস্তুচ্যুত মানুষের সংখ্যা এক দশকে সর্বোচ্চ-ইউএনএইচসিআর কারও নিন্দা করার আগে একটু জেনে নিন-আসিফ নজরুল ব্রিটিশ রাজার সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার একান্ত বৈঠক ভারতে বিমান দুর্ঘটনায় প্রধান উপদেষ্টার শোক, পাশে থাকার আশ্বাস ১ ফেব্রুয়ারি জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তাব নাগরিক কোয়ালিশনের ইউনূসকে সাক্ষাৎ দিচ্ছেন না স্টারমার পাচার হওয়া অর্থ ফেরাতে চ্যালেঞ্জের মুখে সরকার টিউলিপ সিদ্দিকের চিঠি পেয়েছি-প্রেস সচিব মামলার জটে নাকাল বিচার বিভাগ ঈদ শেষে ঢাকায় ফিরছে মানুষ সংকট কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়িয়েছে পুলিশ
* ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন, সবাইকে প্রস্তুতি নেয়ার আহ্বান জানালেন তারেক রহমান * জাতীয় নির্বাচনের জন্য এপ্রিল উপযোগী নয়-ফখরুল * নির্বাচন পেছানোর রাজনৈতিক মহলে কোনো সংশয়-শঙ্কা নেই: স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা * এপ্রিল মাসে চরমভাবাপন্ন তাপমাত্রা থাকে বাংলাদেশে: ড. আবুল কালাম মল্লিক, জ্যেষ্ঠ আবহাওয়াবিদ * এপ্রিল নির্বাচনের জন্য কতটা বাস্তবসম্মত সে বিষয়ে শঙ্কা রয়েছে-গণসংহতি

এপ্রিলে নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা

  • আপলোড সময় : ১১-০৬-২০২৫ ১১:০০:১৩ অপরাহ্ন
  • আপডেট সময় : ১১-০৬-২০২৫ ১১:০০:১৩ অপরাহ্ন
এপ্রিলে নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা


পরিবেশ-পরিস্থিতি কিংবা আবহাওয়া যেমনই থাকুন, আগামী বছরের এপ্রিলের প্রথমার্ধের যেকোনো দিন দেশে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তবে এই সময়ে নির্বাচন কতটা অনুকূল ও বাস্তবসম্মত হবে সে বিষয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন রাজনীতিক দলগুলো। বিশেষ করে রাজনীতিক মাঠের সবচেয়ে বড় দল বিএনপির নেতারা প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্যে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন, প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের দেয়া বক্তব্যে শব্দচয়ন রাজনৈতিক ভব্যতার সীমা অতিক্রম করেছে। দলটি মনে করে, আগামী ডিসেম্বরের মধ্যেই ত্রয়োদ্বশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন হতে হবে। বিএনপির সঙ্গে সুর মিলিয়ে রাজনীতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এপ্রিলে নির্বাচন কঠিন হবে।
বিএনপির নেতারা বলছেন, প্রায় দেড় যুগ ধরে মৌলিক ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত দেশের জনগণ গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য জীবনপণ লড়াই চালিয়ে গেছে। ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টের ছাত্র-জনতার আত্মত্যাগের মাধ্যমে যে বিজয় অর্জিত হয়েছে, তারপরও নির্বাচন নিয়ে অহেতুক বিলম্ব জনগণকে হতাশ ও ক্ষুব্ধ করছে। এছাড়া রমজান, পাবলিক পরীক্ষা ও আবহাওয়া বিবেচনায় ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি পুনর্ব্যক্ত করে সভায় জানানো, নির্দলীয়-নিরপেক্ষ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দাবি থাকলেও এটি এখন একটি বিশেষ রাজনৈতিক গোষ্ঠীর দ্বারা প্রভাবিত হয়ে পড়েছে। এতে করে নিরপেক্ষ নির্বাচনের সম্ভাবনা নিয়ে দেশের জনগণ সঙ্গতভাবেই শঙ্কিত বলে সভায় অভিমত জানান নেতারা।
জানা গেছে, এপ্রিল মাসে আবহাওয়া থাকে বিরূপ। এছাড়াও ফেব্রুয়ারি-মার্চে রোজা ও এসএসসি পরীক্ষা হলে জাতীয় নির্বাচনের জনসংযোগ কঠিন হবে। এসব দাবি রাজনীতিবিদদের। তবে নির্বাচন বিশ্লেষকরা বলছেন, এসব বিবেচনায় জাতীয় নির্বাচন দুই-তিন মাস আগে-পরে হতেই পারে। তবে সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে রাজনৈতিক দল বা সরকারকে কিছুটা ছাড় দিতে হবে। মার্চ থেকে বজ্রপাতের মৌসুম শুরু হলেও এপ্রিলে হয় শক্তিশালী। আবহাওয়া অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী, এপ্রিলে গড়ে সাড়ে ছয় লাখ বজ্রপাত হয়। গড়ে মৃত্যু হয় ১৬ জনের। বজ্রঝড় বা কালবৈশাখীর পাশাপাশি এপ্রিলে বৃষ্টিও বাড়ে। এ মাসে সিলেটে গড়ে ১৬ দিন আর ঢাকায় ১২ দিন বৃষ্টি হয়। এপ্রিলের আরও এক সংকট তাপপ্রবাহ। ২০২৪ সালের এপ্রিল-মে মাসে টানা ৩৫ দিন তাপপ্রবাহের মধ্য দিয়ে গেছে দেশ। তখন তাপমাত্রা ৩৬ থেকে ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত ওঠে। জ্যেষ্ঠ আবহাওয়াবিদ ড. আবুল কালাম মল্লিক বলেন, এপ্রিল মাসে চরমভাবাপন্ন তাপমাত্রা থাকে বাংলাদেশে। এদিকে সূর্য কিরণের স্থায়িত্ব বেশি থাকায় তাপমাত্রাও বেশি থাকে, পাশাপাশি জলীয়বাষ্পের পরিমাণ গড়ে ৭৫ শতাংশ। সুতরাং আমরা তাপমাত্রা যতই রেকর্ড করি না কেন, অনুভূত তাপমাত্রা ৬ ডিগ্রি সেলিসয়াস বেশি থাকে। এপ্রিলের বৈরী আবহাওয়ায় জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের রেকর্ড নেই। ৫৪ বছরে নির্বাচন হয়েছে ১২টি। ১৯৭৩ সালে ভোট হয় মার্চে, এরপর থেকে ১৯৯১ সাল পর্যন্ত জাতীয় নির্বাচন হয়েছে ফেব্রুয়ারি থেকে মে’র মধ্যে। ১৯৯৬ সালে অনুষ্ঠিত হয় জুনে, এরপর ২০২৪ সাল পর্যন্ত পাঁচটি জাতীয় সংসদ নির্বাচন হয়েছে অক্টোবর, ডিসেম্বর ও জানুয়ারিতে। তবে ড. মুহাম্মদ ইউনূস ঘোষণা দিয়েছেন, ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন হতে পারে আগামী বছরের এপ্রিলে। ওই সময়ে থাকবে বৈরী আবহাওয়ার চ্যালেঞ্জ। এসএসসি পরীক্ষা ও রমজান মাসের চাপও থাকবে। তাই বিরোধিতা করছে কয়েকটি রাজনৈতিক দল। তবে এ বিষয়ে নির্বাচন বিশ্লেষক জেসমিন টুলি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর একমত হতে হবে, দেশের জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর ছাড় দিয়ে আসতে হবে। সবাই যদি সবার পয়েন্টে থাকে তাহলে আসলে কোনো সমাধান বের হবে না। জুন মাসে প্রচণ্ড গরম। এপ্রিলের চেয়ে মার্চে গরম একটু কম থাকে। তিনি জানান, জানুয়ারি থেকে এপ্রিলের মধ্যে নির্বাচন হলে বেশ কিছু নতুন ভোটার ভোট দেবার সুযোগ পাবেন। যার সংখ্যা প্রায় ৪০ লাখ।
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে রাজনৈতিক মহলে যে সংশয় দেখা দিয়েছিল, তা অনেকটাই কেটে গেছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার ও যুব ক্রীড়া বিষয়ক উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। তিনি জানান, প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এপ্রিলের প্রথমার্ধে জাতীয় নির্বাচনের যে সময়সীমা নির্ধারণ করেছেন, তাতে নির্বাচন পিছিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা নেই। সজীব ভূঁইয়া বলেন, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল থেকে শঙ্কা প্রকাশ করা হচ্ছিল যে, স্থানীয় সরকার নির্বাচন হলে জাতীয় সংসদ নির্বাচন পিছিয়ে যেতে পারে। কিন্তু এখন সেই সম্ভাবনা নেই। কারণ প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচন আয়োজনের একটি নির্দিষ্ট সময়সীমা দিয়ে দিয়েছেন।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সম্প্রতি বলেছেন, ডিসেম্বরের মধ্যেই জাতীয় নির্বাচন হতে হবে। এ নির্বাচনের জন্য সবাইকে প্রস্তুতি নেয়ার আহ্বান জানান তিনি। তিনি অভিযোগ করেন, নির্বাচন নিয়ে টালবাহানা শুরু হয়েছে। জনগণের রায়কে বাস্তবায়ন করতে হলে নির্বাচিত সরকার দরকার। যে কোনো দলের তাদের কর্মসূচি বাস্তবায়ন করতে হলে দরকার একটি জবাবদিহিমূলক সরকার, দরকার একটি নির্বাচিত সরকার। তবে নির্বাচন অনুষ্ঠান নিয়ে মনে হয় এরই মধ্যে টালবাহানা শুরু হয়েছে বা চলছে। কথিত অল্প সংস্কার আর বেশি সংস্কারের অভিনব আবর্তে ঘুরপাক খাচ্ছে জাতীয় নির্বাচনের ভবিষ্যৎ।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে আহ্বান রেখে তিনি বলেন, আগামী ডিসেম্বরের মধ্যেই জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে হবে। আমরা আবারও বলতে চাই, আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, জনগণ বিশ্বাস করতে শুরু করেছে সংস্কার নিয়ে সময় ক্ষেপণের আড়ালে অন্তর্বর্তী সরকারের ভেতরে এবং বাইরে কারও কোনো ভিন্ন উদ্দেশ্য রয়েছে।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, জাতীয় নির্বাচনের জন্য এপ্রিল মাস কোনোভাবেই উপযোগী নয়। তিনি বলেন, যে সময়টি (এপ্রিল মাস) নির্ধারণ করা হয়েছে সেই সময়টি বাংলাদেশে নির্বাচনের জন্য সঠিক সময় নয়। এখানে (এপ্রিল মাস) আপনার প্রচণ্ড গরম, ঝড়-বৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা থাকবে। ওই সময়টি রোজার পরে পরেই, পাবলিক পরীক্ষা আছে। সময়টা খুব চিন্তা করে দেয়া হয়েছে বলে আমাদের কাছে মনে হয় না। তিনি আরও বলেন, এছাড়া নির্বাচনী প্রচারণা করতে হবে রোজার মাসে যেটা ডিফিকাল্ট হবে। আমাদের যে রিমার্কস সেটা আমাদের স্ট্যাডিং কমিটি গতকাল রাতেই সিদ্ধান্ত নিয়ে তারা মতামত জানিয়েছেন। আমরা মনে করি যে, ডিসেম্বরই নির্বাচন হওয়া সম্ভব এবং সেটাই জাতির জন্য সবচেয়ে উপযোগী হবে। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আমাদের বরাবরই দাবি, ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন চেয়েছিলাম। জনগণের প্রত্যাশাও তাই ছিল। জনগণের এই প্রত্যাশা পূরণ হয়নি। তিনি বলেন, আমরা মনে করি ডিসেম্বরেই নির্বাচন হওয়া সম্ভব এবং এটিই জাতির জন্য সবচেয়ে উপযোগী হবে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির অন্যতম সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, এপ্রিল মাসে নির্বাচনের কথা সরকার বলছেন। আমি ডিসেম্বরে নির্বাচন করতে পারব না কেন? কোথায় বাধা? আর এপ্রিলে নির্বাচন করলে, সেই বাধাটা থাকবে না-সেটা কি? এই কারণটা আমি দেখি না। সরকার কোনো ব্যাখ্যাও দিচ্ছে না। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার, সংস্কার ও নির্বাচন নিয়ে নানা প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। তিনি বলেন, উনি (মুহাম্মদ ইউনূস) বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ব্যস্ত। কিন্তু এই সরকারের তো ব্যস্ততা একটা বিষয়ের ওপর থাকার কথা ছিল। যে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে বিগত দিনে সরকার হয়নি বলেই ফ্যাসিবাদের উত্থান ঘটেছে, এখন আমাদের গণতন্ত্রের উত্তরণ অর্থাৎ নির্বাচনটা হলো মূল এজেন্ডা। কিন্তু বর্তমান সরকার নির্বাচনটাকে মূল এজেন্ডায় না রেখে অপ্রাসঙ্গিক বা যেটা সম্ভব না, এসব বিষয় নিয়ে একটা বিতর্কের সৃষ্টি করেছে। ডিসেম্বরেই সংসদ নির্বাচন আয়োজনের দাবিতে ‘বিএনপি রাজপথে থাকবে’ বলে জানান তিনি।
তিনি বলেন, নির্বাচন দাবিতে আন্দোলন আমাদের চলমান, এটা নতুন করে বলার দরকার নাই। ঈদের আগে-পরে বলারও দরকার নাই, বর্ষার আগে-পরেও বলার দরকার নাই। ১৭ বছর ধরে আমরা এই দাবিতে (নির্বাচন) আন্দোলন করছি। এখন এটার সমাপ্তি দেখতে চাই, এটার এন্ড দেখতে চাই। অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন- যেখানে ভোটাররা নির্ভয়ে ভোট দেবে, সেটা দেখতে চাই। আমরা আন্দোলনে আছি, নির্বাচন বা ভোট আমরা সবসময় চাইব- যতক্ষণ পর্যন্ত এটা (নির্বাচন) না হয়।
বিএনপির সিনিয়ির যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, দু-একজন লোক বা দু-একটি রাজনৈতিক দলের কথায় প্রধান উপদেষ্টা এপ্রিলে নির্বাচনের কথা বলছেন। তিনি বলেন, এপ্রিলে নির্বাচনের সিদ্ধান্তকে দেশের জনগণ অর্বাচীনের মতো কাজ ও অপরিণামদর্শী সিদ্ধান্ত বলে মনে করে। কোন সুতার টানে, কার পরামর্শে ড. ইউনূস এপ্রিলে নির্বাচনের কথা বলছেন? তিনি নির্বাচন নিয়ে কেন টানাহেচঁড়া করছেন এসব প্রশ্ন রাখেন রিজভী। তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার গণতন্ত্র আর সংস্কারকে মুখোমুখি করেছেন। তিনি বলেন, ছাত্র-জনতার আত্মদান তো ছিল যে গণতন্ত্রকে শেখ হাসিনা সিন্ধুকে তালাবদ্ধ করেছিলেন, সেই গণতন্ত্রকে অবমুক্ত করার জন্য। ১৫-১৬ বছর ধরে এদেশের মানুষ ভোট দিতে পারেনি। আওয়ামী লীগ দিনের ভোট রাতে দিয়েছে, সব অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচনের ইতিহাসকে দু’পায়ে মাড়িয়েছে। তিনি বলেন, গণতন্ত্রের একটি প্রধান মাধ্যম হচ্ছে নির্বাচন, আমি আমার বন্ধুর সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করতেই পারি। তবে অধিকাংশ মানুষ যাদের সমর্থন করবে ভোট দেবে, তারাই বিজয়ী হবে। এটিই নির্বাচন।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা আগামী বছরের এপ্রিল মাসের প্রথমার্ধে নির্বাচন আয়োজনের ঘোষণা দিলেও ওই সময় নির্বাচনের জন্য কতটা অনুকূল ও বাস্তবসম্মত সে বিষয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছে গণসংহতি আন্দোলন। ৬ জুন গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ শঙ্কার কথা জানিয়েছে গণসংহতি আন্দোলন। বিবৃতিতে জানানো হয়,  গণঅভ্যুত্থানের জনগণের আকাক্সক্ষাকে ধারণ করার জন্য আমরা শুরু থেকেই বলে এসেছি, বিচার, সংস্কার ও নির্বাচন নিয়ে সরকারের সুস্পষ্ট পরিকল্পনা ঘোষণা করা দরকার। ডিসেম্বরে নির্বাচন দিতে না পারলে তার কারণ সরকারের পক্ষ থেকে স্পষ্ট হওয়া দরকার। প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচনের সময় হিসেবে এপ্রিলের প্রথমার্ধে কথা উল্লেখ করেছেন, যে সময়টি, প্রতিকূল আবহাওয়া, পাবলিক পরীক্ষা এবং এর আগে রোজার কারণে, সবমিলিয়ে নির্বাচনের জন্য কতটা অনুকূল ও বাস্তবসম্মত হবে- সে ব্যাপারে আশঙ্কা রয়েছে। এ বিষয়ে অংশীজনদের সাথে আরও আলোচনা ইতিবাচক হবে বলে আমরা মনে করি। বিবৃতিতে বলা হয়, পাশাপাশি, সংবিধান সংস্কারে জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার জন্য ও এই সংস্কারকে সুরক্ষিত করার জন্য আমরা আগামী নির্বাচনকে ‘সংবিধান সংস্কার পরিষদ’-এর নির্বাচন হিসেবে সম্পন্ন করার আহ্বান জানিয়েছিলাম। প্রধান উপদেষ্টার ভাষণে এ বিষয়ে কোনো দিকনির্দেশনা আসেনি। বিবৃতিতে আরও বলা হয়, বন্দর বিদেশিদেরকে দেয়ার ব্যাপারে নানা মহলের প্রশ্ন ও সমালোচনা আছে। কিন্তু সেটাকে অপপ্রচার বলে ‘প্রতিহত’ করার জন্য যে আহ্বান প্রধান উপদেষ্টা জানিয়েছেন, সেটা তার কাছ থেকে কাম্য নয়। সরকারের বরং এই ইস্যু নিয়ে সকল অংশীজনদের সাথে আলোচনা করা দরকার।
প্রধান উপদেষ্টা আগামী এপ্রিল মাসের শুরুতে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের যে আশ্বাস দিয়েছেন এর ওপর আস্থা রাখতে পারছে না বিএনপির সমমনা ১২ দলীয় জোট। তারা মনে করছে, সরকারের এই আশ্বাস ‘এপ্রিল ফুল’ (এপ্রিলের বোকা) হতে পারে। ৭ জুন গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে ১২ দলীয় জোটের পক্ষ থেকে এই শঙ্কার কথা জানানো হয়। বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন ১২ দলীয় জোট প্রধান ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, জোটের মুখপাত্র বাংলাদেশ এলডিপির চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন সেলিম, জোটের সমন্বয়ক বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসানুল হুদা, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব ডক্টর গোলাম মহিউদ্দিন ইকরাম, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপার) সহ-সভাপতি রাশেদ প্রধান, লেবার পার্টি বাংলাদেশের চেয়ারম্যান লায়ন ফারুক রহমান, কল্যাণ পার্টি চেয়ারম্যান শামসুদ্দীন পারভেজ, ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান মাওলানা আব্দুর রকিব, ইসলামিক পার্টির মহাসচিব আবুল কাশেম, নয়া গণতান্ত্রিক পার্টির সভাপতি এম এ মান্নান, প্রগতিশীল জাতীয়তাবাদী দল (পিএনপির) চেয়ারম্যান ফিরোজ মো. লিটন।
 

নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

কমেন্ট বক্স